Gout- গেঁটেবাতের লক্ষণ ও চিকিৎসা জেনে নিন।

  Gout-  গেঁটেবাতের লক্ষণ ও চিকিৎসা জেনে নিন।

 

Gout-  গেঁটেবাতের লক্ষণ ও চিকিৎসা জেনে নিন।
                                    Gout-  গেঁটেবাতের লক্ষণ ও চিকিৎসা জেনে নিন।

 

Gout- গেঁটে বাত। কারন, লক্ষন, প্রতিকার ও প্রতিরোধ - গেঁটেবাত বা গাউট এমন একটা রোগ যা অসুস্থতা নির্ণয় এর পাশাপাশি বুঝিয়ে দেয় রোগীর আর্থিক সামর্থ্য কতটুক।কারণ সোজাসাপ্টা কথা , না খাওয়া , অভাবী, বা অপুষ্টির শিকার কোন মানুষেরই কখনো গেঁটেবাত রোগটি হয় না। তাই বলা যায় এ রোগটি তথাকথিত একটি রোগ।  গেঁটেবাত মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের বেশি হয়।  সাধারণ মধ্যবয়সে এ রোগটির আবির্ভাব ঘটে।  এমনকি ৬০-৭০ বছর বয়সে এ রোগ হতে পারে। গেঁটেবাত কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়;

প্রাইমারি বাত ঃ এটি প্রধানত ছেলেদের হয় এবং প্রদাহজনিত কারণে এ রোগ সৃষ্টির মূল কারণ।  সাধারণত ৪০ বছর বয়সের উপরে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। 

সেকেন্ডারি বাতঃ  এটি মূলত কিডনি বিকল হওয়ার কারণে অথবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হয়ে থাকে।  এটি মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। 

গেটে বাতের লক্ষণঃ গেঁটেবাত রোগটির উপস্থিতি প্রাথমিক পর্যায়ে খুব বেশি অনুভব করা যায় না।  গেঁটেবাত শরীরের জয়েন্ট  গুলোকে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত করে। সাধারণত শরীরের  জয়েন্ট স্থান গুলো  ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় এবং যন্ত্রণা করে।  হঠাৎ করেই এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় এবং দুই থেকে ছয় ঘণ্টার মাঝে তীব্রতা প্রকাশ পায়। এই কষ্টকর রোগটা সাধারণত বেশি হয়- পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে অথবা হাঁটুতে। চিকিৎসকদের পরিভাষায় একে প্রডাগ্রা বলে।  এছাড়া আক্রান্ত জয়েন্ট গুলো হলো- 

১)গোড়ালির জয়েন্ট 

২) মধ্য পায়ের জয়েন্ট

৩) হাটুর জয়েন্ট

৪) হাতের ছোট ছোট জয়েন্ট.

৫) কব্জির জয়েন্ট

৬) কোনইর জয়েন্ট

কিভাবে Gout-  গেঁটেবাত রোগ সৃষ্টি হয়? 

                                                               Gout-  গেঁটেবাতের লক্ষণ ও চিকিৎসা জেনে নিন।

রক্তে যখন ইউরিক এসিড বেড়ে যায়, তখন ধীরে ধীরে এই বেড়ে যাওয়া এসিড অল্প অল্প করে শরীরের বিভিন্ন খোঁজে বা পকেটে গুলোতে  জমা হতে থাকে এবং ক্রিস্টাল ধারণ কর। ধীরে ধীরে জমতে জমতে একদিন হঠাৎ করে দেখা যায় জয়েন্ট ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় এবং ব্যথা হতে থাকে।যেহেতু ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল গুলো দেখতে সূচের মতো। তাই যন্ত্রনা হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু শরীরের রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে সব সময় গেঁটেবাত রোগটি হবেই এমন কোন কথা নেই। কারণ এই ইউরিক এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে গিয়ে যদি দেহের কিডনিতে জমা হয় তবে তা থেকে হতে পারে রেনাল, কিডনি স্টোন। আর যদি ত্বকের নিচে জমা হয় তবে তার থেকেও গেঁটেবাত হয়।

আরও পড়ুন-কিডনি অসুখের লক্ষণ | কিডনি রোগ বোঝার উপায় | কিডনি নষ্ট হবার লক্ষণ!  

Gout- গেঁটেবাত সৃষ্টির উপযুক্ত সময় 

১) যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় খাসির মাংস সহ লাল জাতীয় মাংস, শুকনো সিমজাতীয় দানা,  মটরশুঁটির, মাশরুম, মাছের ডিম, কলিজা, কচু, পুঁইশাক, অ্যালকোহলের পরিমাণ বেশি থাকে যা রক্তে ইউরিক এসিড বাড়ে।

২) এটা বংশানুক্রম বা জেনেটিক কারণেও হতে পারে।

৩) আবার যারা শরীর হালকা বা মেদহীন রাখার জন্য কঠোর ডায়েটিং করেন তাদের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে হতে পারে।

৪)  দীর্ঘদিন উপোস থাকার কারণে শরীরের রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়।

৫)  যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের শরীর থেকে ঠিকমত তৈরি হওয়া ইউরিক অ্যাসিড যখন প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যেতে পারে না।

গেঁটেবাতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পরামর্শ ও চিকিৎসা 

১) মদ না খাওয়া। ডায়েটিং করার নামে খাওয়া-দাওয়া একবারে ছেড়ে না দেওয়া। প্রচুর পরিমাণে নিয়মিত পানি পান করা যাতে অন্তত কিডনি স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারে।নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক সময় এই গেঁটেবাত রোগ হতে বাঁচতে পারা যায়।

২) বেশি তেল-মসলাযুক্ত এবং বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবার পরিহার করা।

৩) ওজন কমানোর জন্য বা অন্য কোনো কারণে দীর্ঘ মেয়াদী উপোস থাকা উচিত নয়।

৪)  প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া দরকার প্রতিদিন। অবশ্য যারা হার্ট  কিংবা কিডনি রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এ পরামর্শ নয়। 

৫) খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।  যেসব খাদ্য শরীরের মেদ বা ওজন বাড়ায় তা একবারে বর্জন করতে হবে। 

৬) রেডমিট মানে অতি লাল মাংস, শুকনো  সিম, মটরশুঁটি এবং সিফুড পরিহার করা উচিত। 

৭) পরিমিত ব্যায়াম করতে হবে। 

আরও পড়ুন - অর্শ বা পাইলস ঃ কারণ লক্ষণ ও করণীয়

 ***  সারা পৃথিবীতে অন্যান্য রোগের মত গেঁটেবাতের চিকিৎসার কাজ করছেন অনেক চিকিৎসা বিজ্ঞানী. চলছে নানা ধরনের সাধনা।  শুধু রক্তে ইউরিক এসিডের বেড়ে যাওয়াকে প্রতিহত করতে পারলে গেঁটেবাত রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে। গেঁটেবাতের আক্রান্ত রোগী অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলাফেরা করতে হবে। 

1 Comments

Previous Post Next Post